ICO Drops – Crypto Project Listings ICO Drops – Active & Upcoming Projects ...

২০১৮ সাল ! স্মার্টফোনের জন্য বেশ নাটকীয় একটি বছর। বছরের শুরু থেকে খেয়াল করলে দেখা যাবে বেশ কিছু বিশাল পরিবর্তন এসে পরেছে স্মার্টফোন সেক্টরে যা ভবিষ্যৎ কেন্দ্রিক এবং এগুলোর উপর ভিত্তি করে বদলে যাবে আমাদের স্মার্টফোন নিয়ে চিন্তাধারা।
সারা বছরের এইরকমই কিছু অভাবনীয় আবিষ্কার বা ফিচার নিয়ে আজকের লেখা। আলোচনা করবো স্মার্টফোনের বর্তমান-ভবিষ্যৎ নিয়ে। কেমন ছিলো এ বছরের উদ্ভাবনগুলো এবং সামনের দিকে আমরা আরো কি কি দেখতে পারি নতুন।
শুরু করবো আগের বছরের এই সময়ের দিকে গিয়ে। এপল পরিচয় করিয়ে দিলো ৩ডি ফেস আনলকের সাথে। অসংখ্য ডট পয়েন্টের সাহায্যে আপনার ফেসের মানচিত্র পরিমাপ করে আপনার ফোন আনলক হচ্ছে। জাস্ট তাকাবেন এবং আনলকড!

যদিও আগেই রেটিনা স্ক্যান ছিলো যা চোখ দেখে আনলক করে ফেলে তবুও ফেস আনলক প্রভাব ফেললো প্রচুর পরিমানে! যার ফলাফল হিসেবে আমরা এখন প্রায় প্রতিটা স্মার্টফোনে ফেস আনলক সুবিধা দেখছি এবং ব্যবহারকারীরা গুরুত্বপূর্ন ফিচার হিসেবে একে দেখছে।
একই কথা বলা যায় নচ নিয়েও। এসেনশিয়াল প্রথমে আনে তারপর এপলের যোগদানে নচ এখন চাহিদার জিনিষ হয়ে গিয়েছে।

মোটকথা নচ এবং নচে জায়গা নেওয়া ফেস আনলক একটা বিপুল পরিমানের পরিবর্তন এনেছে স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় এবং ডিজাইনে। এক বছর আগে যেখানে মানুষ পুরোপুরি ফিংগারপ্রিন্ট নির্ভর ছিলো সেখানে এখন অনেক ডিভাইসে থাকছেনা ফিংগারপ্রিন্ট অপশন যেমন আইফোন এক্স এবং পরবর্তী মডেলগুলো অথবা ওপ্পো ফাইন্ড এক্স এর মতো মোবাইল।
কিন্তু এখানে এসে যাচ্ছে আরেক চমক! অনেকে যখন শুধু ফেস আনলক দিয়ে ডিভাইস আনছেন ফিংগারপ্রিন্ট ফেলে দিয়ে, তখনই অন্যরা কাজ করছেন ইন ডিসপ্লে ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর নিয়ে। মানে ফোনের চিরচেনা ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সরের বদলে ফোনের ডিসপ্লের নিচে ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর থাকবে।

আমার মতে এইটা স্মার্টফোনের জন্য বড় একটা ব্যাপার। ভিভো মোবাইলের এক্স২১ এবং আমাদের রিভিউ করা ভিভো ভি১১ প্রো তে দেখা পেলাম এই প্রযুক্তির এবং সত্যি অভাবনীয় এক প্রযুক্তে এটি। স্মার্টফোন নিয়ে মানুষের গতানুগতিক ধারনা আমূল পরিবর্তন করার মতো একটা আবিষ্কার এটি!
অন্যদিকে কেউ যখন ডিসপ্লের নিচে ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর বসাচ্ছে তখন হয়তো অন্য কেউ আন্ডার ডিসপ্লে ক্যামেরা এবং সেন্সরস নিয়ে ভাবছে। সম্প্রতি পাওয়া খবর থেকে আভাস পাওয়া যায় স্যামসাং মোবাইল কাজ করছে এই ধরনের ওলেড পর্দা নিয়ে! চিন্তা করে দেখুন ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর থেকে শুরু করে ফ্রন্ট ক্যামেরা এবং সেন্সর যদি ডিসপ্লের নিচেই দেওয়া যায় তাহলে আমরা পাচ্ছি একটি সম্পূর্ন স্ক্রিনের মোবাইল।

আমি মনে করি এ দিয়ে ৯৭-৯৮ শতাংশ স্ক্রিন টু বডি রেশিওর স্মার্টফোন তৈরী করা সম্ভব হবে তখন। আপনারা কেমন ভাবেন জানিনা তবে বছরখানেক আগেও চওড়া বেজেল এবং চিন আমার খুব বিরক্ত লাগতো। স্বপ্ন ছিলো একদিন শুধু ডিসপ্লে আছে এমন ডিভাইস ব্যবহার করবো। দেখা যাচ্ছে আমরা সেদিকেই এগুচ্ছি। সামনে হয়তো ফোল্ডেবল ডিসপ্লের দেখাও পাবো কে জানে !

তারপরে কথা বলবো পপ আপ/মোটরাইজড/স্লাইড প্যানেল নিয়ে। ভিভো নেক্স স্মার্টফোনটি সম্পুর্ন ফুল স্ক্রিন ডিভাইস করতে গিয়ে ক্যামেরা দিলো এইভাবে।
ওপ্পো ফাইন্ড এক্স এ এসে আরেক ধাপ এগিয়ে দেখছি মোটরাইজড প্যানেল লাগিয়ে দিয়েছে। সুন্দর সাউন্ড সহকারে এর প্যানেল উঠে উন্মোচিত হয় ক্যামেরা এবং সেন্সরগুলো। আমার মতে এইটা ফুল স্ক্রিন ডিভাইস তৈরীর একটা বিকল্প রাস্তা হতে পারে কিন্তু নিশ্চিত পরিত্রান নয়। কারন বালু আটকে আটকে এর রিবন আটকে যেতে আরে, বার বার উঠতে নামতে গিয়ে কোনো সমস্যা হওয়াও অবাক করার মত কিছুনা।

আবার শাওমী তাদের মিক্স ৩ এবং হুয়াওয়ে ম্যাজিক ২ তে দিচ্ছে এই ধরনেরই স্লাইডিং প্যানেল। হয়তো সেটা আগেরকালের স্লাইডিং ফিচারফোনের মতো স্লাইড করে উঠাতে নামাতে হবে। যাই হোক, এগুলো থেকে স্যামসাং এর আন্ডার ডিসপ্লে ক্যামেরার ব্যবস্থাই পছন্দ করবো।
এসব বড় চেঞ্জ বাদেও খেয়াল করেছি অনেক বিষয় পুরো বছরজুড়ে। এগুলো মূলত ফোন ক্যামেরাকে ঘিরেই হয়েছে। প্রথমত দুইয়ের অধিক ক্যামেরার ছোঁয়া। পিছনে ২ টা ক্যামেরা দিয়ে মানুষের হয়না তাই ৩ টা ব্যবহার হচ্ছে! আমার হাতের স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৭ এ ৩ টা ক্যামেরা সেন্সর পিছনে! স্যামসাং এরই আবার ৪ রিয়ার ক্যামেরার ডিভাইস আসছে এ৯ মডেলের!

তাছাড়াও ছিলো স্যামসাং এর এস৯+ বা নোট ৯ এর পিছনের ক্যামে ভ্যারিয়েবল বা পরিবর্তনশীল এপারচার ব্যবস্থা। এইটা একটা ভালো পরিবর্তন আমার জন্য এবং সামনে এইটার আরো আপগ্রেড ভার্ষন আসলে স্মার্টফোন ক্যামেরা একটি নতুন মাত্রা পাবে বলা যায়।
তবে আমি এতো কিছুর মাঝে এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে কোনো বড়সড় পরিবর্তন বা চমক দেখছিনা। ঘুরে ফিরে একই লাগছে। স্মার্টফোন অভিজ্ঞতায় নতুন একটা মোড় তৈরী করতে পারে এন্ড্রয়েড বা আইওএস এর একটা বিশাল পরিবর্তন! তবে এক্ষেত্রে ক্রমাগতভাবে বাড়ছে এআই বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার স্মার্টফোনে! আরেকটু বড় মাত্রায় আরেকটু গ্রহনযোগ্যভাবে এআই এর স্বাদ আমাদের স্মার্টফোন এক্সপেরিয়েন্সে অনেকটা প্রভাব ফেলবে মনে হচ্ছে!

সর্বশেষে আমার মতে গোটা বছরের বড় স্মার্টফোন নির্ভর পরিবর্তন বা নতুন আগমনের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য –
• ৩ডি ফেস আইডি।
• প্রায় ফুল স্ক্রিন স্মার্টফোন।
• ইন ডিসপ্লে ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর।
• ভ্যারিয়েবল এপারচার এবং বাজারে ক্রমাগত নতুনত্বের আগমন।
সামনে গিয়ে হয়তো পুরো ফুল স্ক্রিন ডিভাইসের সাথে হলোগ্রাফিক স্ক্রিনের দেখা পেয়ে যেতে পারি! আশা করছি স্মার্টফোন ক্যামেরাতেও বড়সড় পরিবর্তন দেখবো! আপনারা কি কি নতুনত্ব আশা করছেন ২০১৯ সালে এবং এই বছরের পরিবর্তনগুলোর মধ্যে কোনগুলো আপনাদের মন জয় করেছে অবশ্যই কমেন্টে জানান!

একটু ভেবে দেখবেন স্মার্টফোন আমাদের জীবনে কতটা প্রভাব ফেলছে এবং এর অভিজ্ঞতা উন্নত করতে আমাদের কি কি লাগতে পারে। ভালো লাগলে অবশ্যই লেখাটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
No comments
Post a Comment